ভূত-পেত্নী পরিচিতি
ভূত হলো অশরীরি পুরুষ আত্মা, আর পেত্নী (মহিলা ভুত) অশরীরি মেয়ে আত্মা। অপঘাত, আত্মহত্যা প্রভৃতি কারণে মৃত্যুর পর মানুষের অতৃপ্ত আত্মা ভূত-পেত্নী হয়ে পৃথিবীতে বিচরণ করতে পারে।
ভূত কোথায় থাকে:
শেওড়া, তাল, দেবদারু, বেল, অশ্বত্থ প্রভৃতি গাছে একটি দুটি ভূতের দেখা পেতে পারেন। কিন্তু বেশি সংখ্যায় ভূত দর্শনের অভিলাষ থাকলে, আপনাকে যেতে হবে বিজন বনে, তেপান্তরে, কিংবা ভূষণ্ডির মাঠে।
ভূতের গল্পের বর্ণনা মাধ্যম:
ভূতের গল্প উত্তম পুরুষে, অর্থাৎ নিজের জবানিতে বলাই ভালো, তাতে গল্পে অনুভূতির ব্যঞ্জনা তীব্র হয় এবং গা ছমছম ভাবটা প্রকট করা যায়। ভূতের গল্পে স্বভাবতই কাউকে না কাউকে ভূতের পাল্লায় পড়তে হবে, সেটি বর্ণনাকারী নিজেই হতে পারেন।
ভূতের গল্প একটানে বলতে নেই, কিছুটা ভয়ের জায়গায় এসে গল্প থামিয়ে দিয়ে সময় ক্ষেপণ করতে হবে, যাতে অন্যরা অনুরোধ করে গল্প চালিয়ে যেতে। যেমন বলা যায়, "বিজন জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ এক জায়গায় দেখলাম কী..! আচ্ছা, আজ থাক, ঘুম পাচ্ছে, বাকিটা আরেক দিন বলব।"
কিন্তু গল্পের যে অংশগুলি বেশি ভয়ের, বিশেষ করে চূড়ান্ত অংশ, সেখানে না থেমে খুব দ্রুত, জোরে জোরে হঠাৎ বলে ফেলতে হবে। যেমন: "...একথা শুনে লোকটা বলল, আচ্ছা, দেখেন তো এরকম কিনা [নরম স্বরে বলতে হবে] ঘুরতেই দেখি, লোকটার পায়ের কাপড় একটু উপরে, পায়ের পাতা উল্টানো [একটু জোরে], পায়ের আঙ্গুলে কোনো ফাঁক নেই [আরো জোরে], একদম হাঁসের পায়ের মত দেখতে [আরো জোরে বলতে হবে এবং এই দেখো, বলে হঠাৎ গল্পকার নিজের পা দেখিয়ে দেবেন]।
ভূতের গল্প বলার উপযুক্ত সময়:
কেউ অনুরোধ করলেই সাথে সাথে ভূতের গল্প বলতে বসে যাবেন না যেন। সব কিছুরই একটা তরিকা আছে। ভূতের গল্প বলতে হয় মজলিসে, আর গল্পের উপযুক্ত সময় হচ্ছে রাতের বেলা, বিশেষ করে বাদল ধারার রাতে। ঝমঝম বৃষ্টির ফোঁটা পড়বে টিনের চালে বা ছাদে, জানালা থাকবে হাট করে খোলা, হালকা বৃষ্টির ছাঁট আসবে ঘরে। তীব্র কোনো আলো রাখা চলবে না, কেবল একটু দূরে হারিকেন, কুপি বা মোমের মৃদু আলো মিটমিট করে জ্বলতে পারে।
প্রেম-ভালবাসায় ভূত-পেত্নী:
ভূত-পেত্নীর শারীরিক সৌন্দর্যের ব্যাপারে নানা মত চালু থাকলেও, প্রেম-ভালবাসায় তাদের নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততা বেশ সুবিদিত। তাই যুগ যুগ ধরে মানব প্রেমিক প্রেমিকা গভীর ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে পরস্পরকে পেত্নী, ভূত নামে আখ্যায়িত করে থাকে।
ভূত-পেত্নী দশার অবসান:
ভূত-পেত্নী অতৃপ্ত আত্মা, পৃথিবীর মায়ায় ইত:স্তত ছুটে বেড়ায়। তাদের জীবন ক্লান্তিকর ভারবহ উদ্দেশ্যহীন, তাই কেউ ভূত-পেত্নীর আত্মা মুক্ত করলে তারা খুশি হয়। আত্মা মুক্ত করার একটি কার্যকর উপায় হলো গয়ায় গিয়ে ভূতের নামে পিণ্ডি দেয়া।
ভূত-পেত্নী
Posted by রেজওয়ান at 9:44 PM 0 comments
Labels: ভূত-পেত্নী
ক্লাইকোপ্স
তিনজন শতভুজ দৈত্যের পর ইউরেনাসের ঔরসে গেইয়ার গর্ভে তিনজন ক্লাইকোপ্স [গ্রিক ভাষায় ক্যুকল্পস্] জন্ম নেয়। তারাও তাদের অগ্রজ শতভুজ দৈত্যের মতো দানবাকৃতির ছিল। তাদের কপালের মাঝখানে শুধু একটি চোখ ছিল। হেসিয়দের থিওগনি অনুযায়ী তাদের নাম হলো_ ব্রন্তেস [বজ্র], স্তেরোপেস [বজ্র] ও আর্জেস [তীব্র আলোকচ্ছটা]। হেসিয়দের থিওগনি অনুযায়ী তারা প্রত্যেকেই ছিল বলিষ্ঠ, বিশালদেহী ও একরোখা। করত কামারের কাজ তারা। তাদের পিতা ইউরেনাস সন্তানদের অদম্য শক্তি দেখে ভয় পেয়ে যান এবং তাদেরও শতভুজ দৈত্যদের মতো তার্তারাস কারাগারে বন্দি করে রাখে। পরে ইউরেনাস পুত্র ক্রোনাস তাদেরকে শতভুজ দৈত্যদের সঙ্গে তার্তারাস কারাগার থেকে মুক্ত করে। কিন্তু পিতা ইউরেনাসকে সিংহাসনচ্যুত করার পরই আবার তাদের বন্দি করা হয়। একই পন্থায় ক্ষমতার দখল নেন ক্রোনাসের পুত্র জিউস। তিনিও ক্লাইকোপ্স ও শতভুজ দৈত্যকে কারাগার থেকে মুক্ত করে পিতা ক্রোনাসকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। জিউসের প্রধান অস্ত্র বজ্র ক্লাইকোপ্সরাই তৈরি করে দেয়। আর্জেস এতে আনে উজ্জ্বলতা আর ব্রন্তেস দেয় শক্তি। স্তেরোপেস একে দেয় তীব্র আলোকচ্ছটা। সমুদ্রদেবতা পোসাইডনের ত্রিশূল, চন্দ্রদেবী আর্টিমিসের ধনুক ও চাঁদের আলোর তীর, সূর্যদেবতা অ্যাপোলোর ধনুক ও সূর্যরশ্মির তীর, পাতালদেবতা হেডিসের শিরস্ত্রাণও ক্লাইকোপ্সরা নির্মাণ করে। পরবর্তীকালে সূর্যদেবতা অ্যাপোলোর হাতে ক্লাইকোপ্সরা নিহত হয়। জিউস অ্যাপোলোর পুত্র অ্যাস্কিপিয়াসকে বজ্রাঘাতে বধ করায় অ্যাপোলো প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ক্লাইকোপ্সদের তীর নিক্ষেপ করে হত্যা করে।
Posted by রেজওয়ান at 7:42 AM 0 comments
Labels: ক্লাইকোপ্স
শাকচুন্নি
এটি একটি পেত্নী। অল্পবয়সী, বিবাহিত মেয়ে অপঘাতে মারা গেলে শাকচুন্নিতে পরিণত হতে পারে। শুভ্র কাপড় পরিহিত শাকচুন্নি মূলত জলাভূমির ধারে গাছে বাস করে এবং সুন্দর তরুণ দেখলে তাকে আকৃষ্ট করে ফাঁদে ফেলে। কখনো কখনো সে তরুণকে জলাভূমি থেকে মাছ ধরে দিতে বলে। কিন্তু সাবধান, শাকচুন্নিকে মাছ দেয়া মানে নিজের আত্মা তার হাতে সমর্পণ করা!
Posted by রেজওয়ান at 1:56 PM 0 comments
Labels: শাকচুন্নি
চোরাচুন্নি
দুষ্ট ভূত, কোনো চোর মারা গেলে চোরাচুন্নি হতে পারে। পূর্ণিমা রাতে এরা বের হয় এবং মানুষের বাড়িতে ঢুকে পড়ে অনিষ্ট সাধন করে। বাড়িতে এদের অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য গঙ্গাজলের ব্যবস্থা আছে।
Posted by রেজওয়ান at 1:55 PM 0 comments
Labels: চোরাচুন্নি ভূত
মেছো ভূত
মাছলোভী ভূত। বাজার থেকে কেউ মাছ কিনে গাঁয়ের রাস্তা দিয়ে ফিরলে এটি তার পিছু নেয় এবং নির্জন বাঁশঝাঁড়ে বা বিলের ধারে ভয় দেখিয়ে আক্রমণ করে মাছ ছিনিয়ে নেয়।
Posted by রেজওয়ান at 1:54 PM 0 comments
Labels: মেছোভূত
পেঁচাপেঁচি
দেখতে পেঁচার মত এবং জোড়া ভূত—একটি ছেলে, অন্যটি মেয়ে। গভীর জঙ্গলে মানুষ প্রবেশ করলে এরা পিছু নেয় এবং সুযোগ বুঝে তাকে মেরে ফেলে।
Posted by রেজওয়ান at 1:53 PM 0 comments
Labels: পেঁচাপেঁচি ভূত
মামদো ভূত
হিন্দু বিশ্বাস মতে, এটি মুসলমান আত্মা।
Posted by রেজওয়ান at 1:53 PM 0 comments
Labels: মামদো ভূত
ব্রহ্মদৈত্য
ব্রাহ্মণের আত্মা, সাদা ধুতি পরিহিত অবস্থায় দেখা যায় ও খড়মপায়ে ঘুরে বেড়ায়। এরা সাধারণত পবিত্র ভূত হিসেবে বিবেচিত। বলা হয়ে থাকে, কোনো ব্রাহ্মণ অপঘাতে মারা গেলে সে ব্রহ্মদৈত্য হয়। এছাড়া পৈতাবিহীন অবস্থায় কোনো ব্রাহ্মণ মারা গেলেও ব্রহ্মদৈত্য হতে পারে। এরা কারো প্রতি খুশি হয়ে আশীর্বাদ করলে তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জিত হয়, কিন্তু কারো প্রতি নাখোশ হলে তার সমূহ বিপদ। দেবদারু গাছ, বেলগাছ, তালগাছ-বাশঝাড়ে কিংবা বাড়ির খোলা চত্বরে বাস করে।
Posted by রেজওয়ান at 1:52 PM 0 comments
Labels: ব্রহ্মদৈত্য
স্কন্ধকাটা বা কন্ধকাটা বা কবন্ধ
মাথাবিহীন ভূত। অত্যন্ত ভয়ংকর এই ভূত মানুষের উপস্থিতি টের পেলে তাকে মেরে ফেলে। কোনো দুর্ঘটনায়, যেমন রেলে কারো মাথা কাটা গেলে, সে স্কন্ধকাটা হতে পারে। ভয়ংকর হলেও, মাথা না থাকার কারণে স্কন্ধকাটাকে সহজেই বিভ্রান্ত করা যায়।
Posted by রেজওয়ান at 1:52 PM 0 comments
Labels: মস্তকহীন ভূত
আলেয়া
জলাভূমির গ্যাসীয় ভুত। এরা জেলেদেরকে বিভ্রান্ত করে, জাল চুরি করে তাদের ডুবিয়ে মারে। কখনো কখনো অবশ্য এরা জেলেদেরকে সমূহ বিপদের ব্যাপারে সতর্ক করে থাকে।
Posted by রেজওয়ান at 1:51 PM 0 comments
Labels: আলেয়া
নিশি ভূত
খুব ভয়ংকর ভূত। অন্যান্য ভূত সাধারণত নির্জন এলাকায় মানুষকে একা পেলে আক্রমণ করে, কিন্তু নিশি গভীর রাতে মানুষের নাম ধরে ডাকে। নিশির ডাকে সারা দিয়ে মানুষ সম্মোহিত হয়ে ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে পড়ে, আর কখনো ফিরে না। কিছু কিছু তান্ত্রিক অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য নিশি পুষে থাকে।
Posted by রেজওয়ান at 1:50 PM 0 comments
Labels: নিশি ভূত
কানাখোলা
গভীর নির্জন চরাচরে মানুষকে পেলে তার গন্তব্য ভুলিয়ে দিয়ে ঘোরের মধ্যে ফেলে দেয় এই ভূত। মানুষটি তখন পথ হারিয়ে বার বার একই জায়গায় ফিরে আসে, এবং এক সময় ক্লান্ত হয়ে মারা যেতে পারে।
Posted by রেজওয়ান at 1:49 PM 0 comments
Labels: কানাখোলা ভূত
কাঁদরা-মা
অনেকটা নিশির মত এই ভূত গ্রামের পাশে জঙ্গলে বসে করুণ সুরে বিলাপ করতে থাকে। কান্নার সুর শুনে কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে গেলে তাকে ইনিয়ে বিনিয়ে গল্প বানিয়ে জঙ্গলের আরো গভীরে নিয়ে মেরে ফেলে। ছোট বাচ্চারা এর কান্নায় বেশি আকৃষ্ট হয়।
Posted by রেজওয়ান at 1:47 PM 0 comments
Labels: কাঁদরা মা ভূত